রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
স্বাস্থ্য-চিকিৎসা।।
আমাদের দেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি হচ্ছে কিডনি। শরীরে কোনো বিষাক্ত বর্জ্য জমতে দেয় না কিডনি। এটি আমাদের দেহে ফিলটারের মতো কাজ করে।
প্রতিদিন আমাদের দুটি কিডনি ১২০ থেকে ১৫০ কোয়ার্ট রক্ত, বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল ফিল্টার করে ১ থেকে ২ কোয়ার্ট প্রস্রাব উৎপাদন করে। ইলেকট্রোলাইট নিয়ন্ত্রণ এবং হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখার হরমোন উৎপাদনও করে কিডনি। এছাড়া লাল রক্ত কনিকা উৎপাদন এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে কিডনি।
এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আমাদেরই কিছু বদঅভ্যাসের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে আমাদের উচিত সেই বদঅভ্যাসগুলো ত্যাগ করে কিডনির সুস্থতা নিশ্চিত করা। চলুন জেনে নেয়া যাক প্রতিদিনের এমন ১০টি অভ্যাসের বিবরণ যেগুলো আপনার কিডনিকে ধ্বংস করছে।
পর্যাপ্ত পানি পান না করা: যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করেন, তাহলে দেহ থেকে যেসব বর্জ্য এবং বিষ বের হয়ে যাওয়ার কথা ছিল সেসব না বের হয়ে জমা হতে থাকবে। যার ফলে কিডনির মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অতিরিক্ত চিনি খাওয়া: গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন দুইবাবের বেশি মিষ্টি পানীয় পান করেন তাদের প্রস্রাবে প্রোটিন দেখা দেয়। কিডনি বিকল হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলোর একটি এটি।
অতিরিক্ত লবণ খাওয়া: শরীরে অতিরিক্ত সোডিয়াম প্রবেশ করলে কিডনি ড্যামেজ হতে পারে। কারণ তা কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে এবং রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়।
অতিরিক্ত কফি পান: ক্যাফেইন কিডনির ওপর চাপ এবং রক্তচাপ বাড়ায়। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত কফি পান করলে কিডনি বিকল হয়ে পড়তে পারে।
ঘুম কম হওয়া: দীর্ঘদিন ধরে ঘুম কম হলে কিডনি বিকল হয়ে যেতে পারে। কেননা কিডনিতে দিনের বেলায় যে ড্যামেজ হয় তা মেরামতের জন্য রাতে ভালো ঘুম দরকার হয়।
অতিরিক্ত মদপান: প্রতিদিন বেশি মদপান করলে কিডনি বিকল হয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে। কারণ অ্যালকোহল কিডনি এবং লিভারের ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে।
প্রস্রাব ধরে রাখা: সময় মতো প্রস্রাব না করে তা চেপে রাখলে কিডনির ওপর যে চাপ পড়ে তার ফলে কিডনি বিকল হওয়া এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার মতো বিপদ ডেকে আনতে পারে।
ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি: আপনি যেসব খাবার খান সেসবের ওপরই কিডনির ভালো থাকা না থাকার বিষয়টি নির্ভর করে। আপনার শরীরে যদি ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন বি৬ এর ঘাটতি থাকে তাহলে আপনার দেহ ঠিকঠাক মতো কাজ করবে না।
ব্যাথানাশক ওষুধের অপব্যবহার: যন্ত্রণা এবং ব্যথা দূর করার জন্য যেসব ওষুধ সেবন করা হয় সেসবের বেশ কয়েকটিতে আছে বিপজ্জনক সব রাসায়নিক। যা থেকে দেহে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর এসবের ওষুধের মারাত্মক ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর একটি হলো কিডনি এবং লিভার ধ্বংস।
অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন খাওয়া: লাল মাংসের মতো প্রাণিজ প্রোটিন বেশি খাওয়ার ফলে কিডনির বিপাকীয় প্রক্রিয়ার ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়তে পারে। সুতরাং লাল মাংস না খাওয়াই কিডনি ভালো রাখার উপায়।